কর্মবিরতিতে ২৯ রোগীর মৃত্যু, ক্ষতিপূরণ দেবেন মমতা

কর্মবিরতিতে ২৯ রোগীর মৃত্যু, ক্ষতিপূরণ দেবেন মমতা

৯ আগস্ট কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা ঘটে। এরপর অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত এবং নিরাপত্তার দাবিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠে গোটা পশ্চিমবঙ্গ। একাধিক দাবি নিয়ে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে কর্মবিরতি পালন করছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা।

এমন পরিস্থিতিতে ভেঙে পড়ে রাজ্যের স্বাস্থ্যসেবা। অভিযোগ উঠেছে, হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। রাজ্য সরকারের দামধ্যেই মারা গেছে ২৯ জন রোগী।

জনগণের স্বার্থে’ পদত্যাগ করতে রাজি থাকার জানিয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা উল্লেখ করেন। এদিকে আনন্দবাজার পত্রিকার খবর অনুযায়ী, ডাক্তারদের কর্মবিরতির কারণে ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার। শুক্রবার মৃতদের প্রতি পরিবারকে ২ লাখ করে ভারতীয় টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মমতা।

বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে মমতা বলেন, ‘যারা আজ আর জি করের অচলাবস্থার অবসান প্রত্যাশা করেছিলেন, আমি বাংলার (সেসব) মানুষের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। তারা (জুনিয়র চিকিৎসক) নবান্নে (পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সচিবালয়) এসেছিলেন, কিন্তু বৈঠকে বসেননি। আমি তাদের কাজে ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।’

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জনগণের স্বার্থে পদত্যাগ করতে প্রস্তুত। কারণ তিন দিন ধরে আমার সর্বোচ্চ সদিচ্ছা ও চেষ্টা সত্ত্বেও চিকিৎসকরা আলোচনায় বসতে রাজি হননি।’ পশ্চিমবঙ্গের আর জি কর হাসপাতালে নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার চান বলে ৫ তিনি।

গত ৯ আগস্ট কলকাতার আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক নারী চিকিৎসককে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গসহ সারা ভারতে বিক্ষোভ শুরু হয়। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসকরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। আন্দোলনে চিকিৎসকদের অংশগ্রহণের ফলে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।

আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, রাজ্য সরকারের অভিযোগ অনুযায়ী ডাক্তারদের কর্মবিরতির ফলে বহু মানুষ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পাচ্ছেন না। অনেকে বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন। শুক্রবার মমতা বলেছেন, ‘জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির ফলে স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। তার ফলে ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক। মৃতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে রাজ্য সরকার ২ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করেছে। ২৯ জন মৃতের পরিবারকে ওই টাকা দেওয়া হবে।’

মমতার দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন আন্দোলনরত ডাক্তাররা। তাদের দাবি, কোনো হাসপাতালেই চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হয়নি। সিনিয়র চিকিৎসকরা পরিষেবা দিচ্ছেন। তারা বাড়তি পরিশ্রম করছেন। কোথাও বিনা চিকিৎসায় রোগীকে ফিরে যেতে হচ্ছে না। রাজ্যের দাবির প্রেক্ষিতে জুনিয়র ডাক্তারদের পাল্টা যুক্তি, রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার বেহাল দশায় এমনিতেই বহু মানুষ প্রতিদিন উপযুক্ত চিকিৎসা পরিষেবার অভাবে মারা যান। সেই ব্যর্থতা ঢাকতেই রাজ্য সরকার ডাক্তারদের কর্মবিরতিকে কাঠগড়ায় তুলছে।